গোয়াইনঘাট প্রচ্ছদ

ওসি আহাদের তৎপরতায় ফটোগ্রাফার উজ্জ্বল হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার

ডেইলি গোয়াইনঘাট ডেস্ক :: পর্যটন কেন্দ্র জাফলংয়ে দিন দুপুরে উজ্জল মিয়া (১৩) নামের এক ফটোগ্রাফারকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে তার ক্যামেরা ও মোবাইন ফোন নিয়ে পালানোর সময় পর্যটক বেশে আসা দুই দুর্বৃত্তকে গ্রেফতার করেছে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ। রোববার (৬ডিসেম্বর) দুপুরে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটন কেন্দ্র জাফলংয়ের জিরো পয়েন্ট এলাকার অদূরে মায়াবী ঝর্ণায় এ হত্যাকান্ড ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় তাৎক্ষণিক গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল আহাদ’র তৎপরতায় ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত দুজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শ্রমিক বাবার অভাব অনটনের সংসারে খানিকটা অর্থের যোগান দিতে লেখাপড়ার পাশাপাশি উজ্জল মিয়া ফটোগ্রাফার এবং ট্যুরিস্ট গাইড হিসেবে কাজ করতো। প্রতিদিনের ন্যায় রোববার (৬ডিসেম্বর) সকালেও পর্যটকদের ছবি তুলতে জাফলং জিরো পয়েন্ট এলাকায় যায় ফটোগ্রাফার উজ্জল। দুপুর আড়াইটার দিকে পর্যটক বেশে আসা দুই যুবক ছবি উঠাবে বলে জিরো পয়েন্ট এলাকায় গিয়ে উজ্জলের সাথে চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ি ছবি উঠানোর কথা বলে তারা উজ্জলকে নিয়ে জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে মায়াবি ঝর্ণার দিকে যায়। এক পর্যায়ে সুযোগ বুঝে পর্যটক বেশে থাকা ওই দুই যুবক পিছন দিক থেকে উজ্জলকে এলাপাতাড়ি ভাবে ছুরিকাঘাত করে ক্যামেরা ও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নির্মম এ হত্যাকান্ডের শিকার ওই ফটোগ্রাফারের নাম উজ্জল মিয়া উপজেলার রসুলপুর গ্রামের আব্দুস ছাত্তারের ছেলে এবং স্থানীয় জাফলং আমির মিয়া স্কুল এন্ড কলেজের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।এঘটনার খবর পেয়ে গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল আহাদ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে তিনি বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। তবে যে বা যারাই এঘটনার সাথে জড়িত থাকুক না কেন তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। এলক্ষে পুলিশ ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে। পুলিশি কার্যক্রমের চার ঘন্টার মধ্যে অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল আহাদ’র বিচক্ষণতায় ঘটনার ৪ঘন্টার মধ্যে মূলঘাতকরা ট্রাক যোগে পলায়নের সময় ওসি আব্দুল আহাদ নিজে চেকপোস্ট বসিয়ে জাফলংয়ের গুচ্ছগ্রাম নামক স্থান থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন।

উল্লেখ্য চলতি বছরের ১৫জুলাই পর্যটন কেন্দ্র জাফলং থেকে সাদ্দাম হোসেন নামের অপর আরেক ফটোগ্রাফারকে একই কায়দায় ছুরিকাঘাতে হত্যা করে তার ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় পর্যটক বেশে আসা দুই যুবক। এ নিয়ে পর্যটন কেন্দ্র জাফলংয়ে পাঁচ মাসের ব্যবধানে দুইজন ফটোগ্রাফারকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে তাদের ক্যামেরা এবং মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। দিন দুপুরে একজন ফটোগ্রাফারকে হত্যা করে তার ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় পর্যটন কেন্দ্র জাফলংয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও স্থানীয় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *