গোয়াইনঘাট প্রচ্ছদ

পারিবারিক সবজি চাষ বৃষ্টির জন্য ব্যাহত, পিছিয়ে পড়েছে স্থানীয় কৃষকেরা

গোয়াইনঘাট প্রতিনিধিঃ সিলেটের সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট উপজেলার আয়তন প্রায় ৪৮৭.৭৩ বর্গ কি.মি। প্রাকৃতিক সম্পদের গর্ভধারীনি এই উপজেলার লোক সংখ্যা প্রায় চার লাখ। নারী ও পুরুষ মিলে গোয়াইনঘাট উপজেলার ভোটার সংখ্য ১ লাখ ৭৯ হাজার। শিক্ষা, সংস্কৃতি, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ প্রতিটি বিষয়ে এ উপজেলাটি রয়েছে অনেক পিছিয়ে। বর্তমান সরকার কৃষি জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে বসতবাড়ির আঙ্গিনাসহ পতিত জমিতে তৈরি করা হচ্ছে পারিবারিক পুষ্টি বাগান। এমন ১৫ জাতের শাক-সবজি চাষ করতে সরকার বিনামূল্যে উপজেলার ৫০০ শতাধিক কৃষক পরিবারকে শাকসবজির বীজ প্রদান করেছে। বাড়ির পাশে শাক-সবজির চাষ, ফুল দেবে, ফল দেবে, পুষ্টি বারো মাস। শুধু পুষ্টি নয়, সংসারে অর্থের ও যোগান দেয়। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা যায় আগাম জাতের শীতকালীন সবজি। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনায় দেশে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা আনতে এসব উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস। সম্প্রতি অতি বৃষ্টি ও কয়েক দফা বন্যায় উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় কৃষকের আগাম তৈরি সবজির ক্ষেত করতে পারছেন না পারিবারিক কৃষকরা। ফলে বাজারে শাক সবজির দাম কমছে না।

সময় এমনইতে বাজারে শাকসবজির দাম বেড়ে যায় কয়েকগুণ। পারিবারিক সবজি কৃষকরা সবজির বেড তৈরি করতে হচ্ছেন বাধাগ্রস্ত। কিছু কৃষক জমি চাষ করলেও গেলো সপ্তাহের গুড়িগুড়ি বৃষ্টি মাটি শুকানো মাড়ানো সহ বেড তৈরিতে বিভিন্ন সমস্যায় পড়ছেন। আকাশ থেকে মেঘ বন্ধ না হযওয়ায় এখনোও অনেক কৃষক জমি শ্যাঁত শ্যাঁতে থাকায় হাল চাষ করতে পারছেন না। বিদায় বর্তমান বছরে গোয়াইনঘাটে পারিবারিক সবজি চাষী কৃষকরা সবজি চাষে পিছনে পড়ে গেছেন। পারিবারিক সবজি চাষ শুধু খাদ্য পুষ্টি আর অর্থের যোগান দেয় না, বিভিন্ন বাজারগুলোতে শাকসবজি দ্রব্যমূল্য কমাতে রাখে অগ্রণী ভূমিকা। গোয়াইনঘাট উপজেলার আলীরগাঁও, ফতেপুর, পূর্ব জাফলং, পশ্চিম জাফলং ও রাধানগরে যারা আগাম সবজি চাষ করে থাকেন তারা পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে ব্যবসায়ী মুনাফা অর্জন করে থাকেন। কিন্তু উপজেলার বৃহত্তম অংশ পারিবারিক সবজি চাষিরা এই বছর আছেন বিপাকে। কৃষক এবাদুর রহমান আলাউদ্দিন জয়নাল আবেদীনসহ অনেকে বলেন, গত বছর এই মৌসুমে আমরা নিজের ফলানো অনেক জাতের সবজি খেতে পেরেছি। রাস্তায় দাঁড়ালে দেখা যেত মানুষ হাতে করে কাঁধে করে শিম, লাউ, মুলা পাতাসহ বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি বাজারে নিয়ে যাচ্ছে। এই বছরে তা দেখা যায় না। ফলে শাক সবজির বাজার দরও কমছে না। এটা প্রকৃতির খেলা কিছু করার নাই। বর্ত্তমান বছরে কৃষক দিনমজুর মধ্যবিত্ত নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ কোনভাবেই যেন কোনো কিছুতে সুবিদা করে সামাল দিয়ে উঠতে পারছে না।

উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালেব বলেন, পারিবারিক পুষ্টি বাগান তৈরি, সময়মত বীজ রোপণ ও পরিচর্যাসহ সার্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। প্রতিকূল আবহাওয়া পারিবারিক সবজি চাষে অনেকটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুলতান আলী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনায় এক ইঞ্চি জমিও যেন পতিত না থাকে। এ উদ্দ্যেশো বাস্তবায়নে পারিবারিক পুষ্টি বাগান তৈরিতে সহযোগিতা করছে কৃষি বিভাগ। যা এখন কৃষকদের মাঝে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আগামীতে এর পরিধি আরও বাড়ানো হবে। যাতে নিজেদের উৎপাদিত সবজি নিজেরাই খেতে পারেন। এবছর হয়তো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে পারিবারিক সবজি চাষ কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। তবে উপজেলার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ইউনিয়নে আগাম সবজি ফসল ভালো হয়েছে, তারা পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে আর্থিক মুনাফা অর্জন করতে পারছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *