সারাদেশ হোম

গোয়াইনঘাটে অনাড়ম্বর আয়োজনে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ পালন

গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি:: ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের উপলক্ষে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, গোয়াইনঘাট সার্কেল, গোয়াইনঘাট থানা, গোয়াইনঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগ, গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাব, উপজেলা যুবলীগ, গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজ, গোয়াইনঘাট সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন। এছাড়াও গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করে উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।সকাল সাড়ে ১১টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফারুক আহমদ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফিয়া বেগম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানভীর হোসেন, গোয়াইনঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: গোলাম কিবরিয়া হেলাল, গোয়াইনঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওমর ফারুক, গোয়াইনঘাট উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক, গোয়াইনঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুভাস চন্দ্র পাল ছানা, উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও লেঙ্গুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান, পূর্ব আলীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাব সভাপতি এম এ মতিন, সাবেক সভাপতি মো: আব্দুল মালিক, নির্বাহী সদস্য আলী হোসেন, গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ফারুক আহমদ, আহবায়ক কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম, গোয়াইনঘাট উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি কামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরওয়ার প্রমূখ। গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিলুর রহমান বলেন, আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। ১৯৭১ সালের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা সংগ্রামের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে মুক্তিযুদ্ধের জন্য বাঙালি জাতিকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরাধীনতা থেকে বাঙালি জাতির মুক্তি এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের এই ভাষণ এক অনন্যসাধারণ ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এই ভাষণের মধ্যে বঙ্গবন্ধু স্পষ্টভাবেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা শব্দটি উচ্চারণ করেছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে সেই স্বাধীনতা অর্জনে গেরিলাযুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি আজ বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবেও স্বীকৃত। এটি বিশ্বে সর্বাধিকবার প্রচারিত অলিখিত ভাষণ। এই দিনে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক উত্তাল জনসমুদ্রে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ডাক দেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম’। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করেন। তার এই ভাষণ ছিল জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার চূড়ান্ত নির্দেশনা।

এই দিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখো জনতার সামনে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে পরাধীন জাতিকে স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করেন। মাত্র ১৮ মিনিটের ভাষণে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে সাড়ে সাত কোটি বাঙালিকে দিক-নির্দেশনা দেন তিনি। তার ওই ভাষণের মধ্য দিয়েই স্পষ্ট হয়ে ওঠে স্বাধীনতার ঘোষণা, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের সকল দিক-নির্দেশনা। মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ‘ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি…, তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রু র মোকাবিলা করতে প্রস্তুত থাক। ৭ মার্চের এই ভাষণের মধ্যেই স্পষ্ট ছিল পাকিস্তানের শোষণ-নির্যাতন থেকে মুক্ত হতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা। পাকিস্তানের শাসন-শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের চূড়ান্ত পর্বে বঙ্গবন্ধু এই ভাষণ দেন। ২০১৭ সালের অক্টোবরে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা-ইউনেসকো বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের এই ভাষণকে বিশ্ব ঐতিহ্যের (ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ) স্বীকৃতি দেয়। স্বাধীনতার জন্য অদম্য স্পৃহা নিয়ে সংগ্রামরত মুক্তিকামী জাতির আশা আকাঙ্ক্ষা বাস্তায়নে বঙ্গবন্ধু সেদিন বজ্রকণ্ঠে উচ্চারণ করেছিলেন ‘প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায়, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোল এবং তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো। মনে রাখবা রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ। ’বঙ্গবন্ধুর ওই নির্দেশের পর ছাত্র, যুবকসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *