ডেইলি গোয়াইনঘাট ডেস্ক:: সিলেটের গোয়াইনঘাটে কমেছে বানের পানি। পানি কমে যাওয়ার সাথে সাথে ফুটে উঠেছে প্রলয়ংকারী এই বন্যার ভয়াবহতার চিত্র। উপজেলার এমন কোন সড়ক নেই যেখানে কোথাও না কোথাও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি। গোয়াইনঘাট- লেঙ্গুঁড়া-সালুটিকর গাং কিনারী সড়ক,গোয়াইনঘাট-পিরিজপুর-সোনারহাট সড়ক, সিলেট-সালুটিকর- গোয়াইনঘাট সড়ক, গোয়াইনঘাট-হাতিরপাড়া, ফতেহপুর সড়কসহ প্রায় সবকটি সড়কের চিত্র একই। কোথাও কোথাও সড়ক উন্নয়নের কাজ শেষ হয়েছে। কোথাও চলমান ছিলো এমতাবস্থায় আকষ্মিক পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট বন্যায় মারাত্মক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে এসব সড়কের।সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায় যে,সড়কের উপর দিয়ে প্রবল স্রোতের পানি প্রবাহিত হয়ে যাওয়ায় এসব সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক লেঙ্গুঁড়া গ্রামের উপর দিয়ে চলমান গোয়াইনঘাট-লেঙ্গুঁড়া-সালুটিকর ভায়া জলুরমুখ গাং কিনারী রাস্তা। এই সড়কের গোয়াইনঘাট টিএনটি’র একটি দক্ষিন থেকেই ৩ কি. মি. দক্ষিণ পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় শত শত গর্ত চোখে পড়ে। কোথাও কোথাও সদ্য সমাপ্ত সড়ক উন্নয়ন সর্ম্পূন্ন বিনষ্ট হয়ে গেছে। গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় লেঙ্গুঁড়ার সাথে উপজেলা সদরের যানবাহন চলাচল সম্পূন্নরূপে বন্ধ রয়েছে। যানবাহন বন্ধ থাকার পাশাপাশি মানুষজন গবাদি পশুর যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী। সরেজমিন কালে জানা যায়, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সোনিয়া এন্টার প্রাইজ কর্তৃক গোয়াইনঘাট-নন্দিরগাঁও ভায়া জলুরমুখ সড়কটি নির্মাণ কাজ ২০২১ সালে ডিসেম্বরে শুরু হয়ে হস্তান্তর হয় চলতি বছরের ২৭ মার্চ ২০২২ ইং। ৬ মাস যেতে না যেতেই এই ভয়াবহ বন্যায় সড়কটিকে চুরমাচুর করে দিয়ে গেছে। দেখলে মনে হবে লেঙ্গুঁড়ার এই সড়ক যেন কোন সুনামির দ্বারা ক্ষত বিক্ষত হয়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো: আব্দুল জব্বারকে পাওয়া যায় শ্রমিক লাগিয়ে সড়কে উপড়ে পড়া নির্মাণ সামগ্রী একত্রিত করতে। কথা হলে তিনি জানান, ৭৯লক্ষ টাকায় উক্ত সড়কটি আমার প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে কাজ পাওয়ার সাথে সাথে ইতোপূর্বে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরে হস্তান্তরও করেছি। উজান থেকে আসা পাহাড়ী ঢলে সড়কটি অগণিত স্থানে ভাঙ্গন ও গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় সড়টির মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর অবহিত রয়েছে। এদিকে গোয়াইনঘাট-পিরিজপুর-সোনারহাট সড়কের গোয়াইনঘাট কলেজ মোড়, আলীরগ্রাম, উনাইর ভাঙ্গা, গোয়াইনঘাট সালুটিকর সড়কের তুড়–কভাগ, পেকেরখাল,গোয়াইনঘাট রাধানগর-জাফলং সড়কের কাপাউরা এলাকা,বিন্নাকান্দি, ভাঙ্গা ব্রীজসহ বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন ও ব্রীজ সমূহের গুড়া থেকে মাটি সরে গিয়ে যোগাযোগ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।
সরেজমিন পরিদর্শনকালে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার মানুষজন জানান,বন্যার ভয়াবহতার চিত্র ফুটে উঠার সাথে সাথে দূর্ভোগ যন্ত্রণাও বেড়ে চলেছে। সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ অথবা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে কোথাও কোথাও। ৪নং লেঙ্গুঁড়া ইউ/পি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মুজিবুর রহমান জানান, এবারের বন্যায় গোয়াইনঘাটের সর্বত্র সড়ক,কৃষি,অবকাঠামোসহ মারাত্মক ক্ষতি সাধন হয়েছে। বিশেষ করে সড়ক যোগাযোগ এবং নিম্নাঞ্চল বাড়ী ঘরের চিত্র অত্যান্ত ভয়াবহ। উপজেলার সাথে লেঙ্গুঁড়ার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। নৌকাই এখন আমার ইউনিয়নের যোগাযোগের প্রধান বাহন। কথা হলে উপজেলা প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, গোয়াইনঘাটে উজান থেকে আসা পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট বন্যায় সবকটি সড়কের মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বিভিন্ন সড়কে সরাসরি যানবাহন চলাচল সহ সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। ক্ষয় ক্ষতি ৮০ থেকে ৯০ কোটি হতে পারে বলে জানান তিনি।
