স্টাফ রির্পোটারঃঃ উত্তর সিলেটের বহুল পরিচিত গোয়াইনঘাট উপজেলার আঙ্গারজুর আলিম মাদ্রাসার সহ-সুপার মাওলানা হেলাল আহমদের বিরুদ্ধে নানা বিষয়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সহ-সুপার মাওলানা হেলাল আহমদের ভিন্ন বিষয়ে দুর্নীতির প্রমাণ সংগ্রহ করে মাদরাসার সাথে সম্পৃক্ত গ্রাম গুলোর মানুষেরা হেলালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচী গ্রহন করেছেন। ফলে সুপারের দুর্নীতিতে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীরা স্বস্তিতে নিঃশ্বাস নিচ্ছেন। মাদ্রাসা সহ-সুপারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো হচ্ছে, চলতি বছরের পহেলা মে থেকে মাদারাসায় টানা অনুপস্থিত, উপবৃত্তির অর্থ আÍসাৎ, বিধি মোতাবেক কমিটি গঠন না করা, সরকারি স্বার্থ সংরক্ষণ না করা,মাদরাসায় নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ পরিদর্শন না করা, বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা না নেয়া, অনলাইনের মাধ্যমে কোন ক্লাস না নেয়া,শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে হয়রানিসহ নানা অনিয়ম। এই অনিয়ম দুর্নীতির বিচার চেয়ে ও তাকে দ্রুত অপসারণের দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী।অভিযোগে জানা গেছে, ১৯১৯ সালে আঙ্গারজুর গ্রামসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রাম মিলে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিতা করেন। ১৯৮৫ সালে দাখিল এমপিওভুক্ত হয়। ২০২০ সালে ওই মাদরাসটি আলিম পর্যন্ত এমপিওভুক্ত হয়। উক্ত মাদরাসায় দীর্ঘদিন ধরে সুপারের দায়িত্ব পালন কালে ২০১৭ সালে মৃত্যু বরণ করেন মাওলানা মুজিবুর রহমান কামালী। সাবেক সুপার মাওলানা মুজিবুর রহমান কামালীর মৃত্যুর পর থেকে সহ- সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মাওলানা হেলাল আহমদ । বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ওই মাদ্রাসার বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির ৮ সদস্যসহ এলাকার কয়েক শতাধিক মানুষ এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেছেন। মাদ্রাসার সহ-সুপারের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ পাওয়ার পর যথাক্রমে মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সদস্যসহ এলাকাবাসীর যৌথ উদ্যোগে গত ৪ নভেম্বর, ৮ নভেম্বর ও ১১ নভেম্বর সভা আহবান করেন এবং সহ-সুপার হেলাল আহমদকে সভায় অংশগ্রহণের অনুরোধ জানান। কিন্তু কো সভাতেই হেলাল আহমদ উপস্থিত হননি। মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মুহিবুর রহমান, নন্দীরগাওঁ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মামুন রশীদ শাহীন, আজবর আলী, মুশাহিদ মেম্বার, খলিলুর রহমান (মরম আলী) ইউপি সদস্য নিজাম উদ্দিন, আমিনুর রহমান শিকদার , রুহুল আমিন চৌধুরী বাবুল,আব্দুল হান্নান, মাওল আতাউর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী, আব্দুস সোবহান, হাজী রফিক আহমদ, মস্টার জিল্লুর রহমান, মিছবাহ উদ্দিন, মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা মুহিবুর রহমান, মস্টার ফয়জুল হক,অফিস সহকারী আব্দুল্লাহ,মিজানুর রহমান, মোঃ বিলাল উদ্দিনসহ একাধিক ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, মাদ্রাসার নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রভাব পড়েছে এখানকার শিক্ষা ব্যবস্থায়। যার কারণে অনেক শিক্ষার্থী এই মাদ্রাসাও ত্যাগ করে অন্য মাদ্রাসায় গিয়ে ভর্তি হয়েছে। তারা স্মারকলিপিতে আরো উল্লেখ করেন বিগত কয়েক বছর থেকে মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভায় মাদরাসার জন্য কম্পিউটার ক্রয় এবং শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার ক্লাস নেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও দূর্নীতিবাজ সহসুপার তা বাস্তবায়ন করেননি। বর্তমানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানের শিক্ষার্থীদের হাতে এসেস মেন্ট ও অনলাইনে ক্লাস নেয়া হচ্ছে। কিন্তু এই প্রতিষ্টানের সহ-সুপার নিজেই অনুপস্থিত আর শিক্ষার্থীদের খবর কে রাখে। সর্বশেষ মাদরাসা পরিচালনা কমিটি ও এলাকাবাসীকে না জানিয়ে দুই লাখ টাকা রফাদফা করে গোপন এডোক কমিটির প্রস্তবণা শিক্ষা বোর্ড প্রেরন করেন। কমিটির সদস্য ও ইউপি সদস্য নিজাম উদ্দিন জানান, গত দুই বছরের মাদরাসার বিভিন্ন আয় ও ব্যয়ের হিসাব দিতে অনীহা প্রকাশ করেন হেলাল উদ্দিন।
এ বিষয়ে তার উপর আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে জানিয়েছেন সহ-সুপার হেলাল আহমদ। তবে মাদরাসা প্রস্তাবিত এডোক কমিটির প্রধান গোলাপ মিয়ার গুণকীর্তন করে বলেন, উক্ত মাদরাসায় গোলাপ মিয়ার নিজস্ব একটি ভবন এবং নবনির্মিত ভবনের মাঠি ভরাটে ৬ লাখ টাকা দান করেছেন।গোয়াইনঘাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, আঙ্গারজুর আলিম মাদরাসার সহ-সুপার মাওলানা হেলাল আহমদের উপর আনীত অভিযোগ তদন্ত করে প্রমানীত হলে তার উপর ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুরোধ করা হবে।