ডেইলি গোয়াইনঘাট ডেস্ক: “সকলের জন্য স্যানিটেশন, নিশ্চিত হোক উন্নত জীবন” এই প্রতিবাদ্যকে সামনে রেখে সারা দেশের ন্যায় সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় জাতীয় স্যানিটেশন মাস এবং বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস উপলক্ষ্যে এক বর্নাঢ্য র্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়েছে।রবিবার ১৮অক্টোবর সকাল ১০টায় গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর গোয়াইনঘাটে’র সহযোগিতায় জাতীয় স্যানিটেশন মাস এবং বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস উপলক্ষ্যে র্যালী পরবর্তী আলোচনা সভায় প্রকৌশলী ইউনুস আলীর সঞ্চালনায় ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাজমুস সাকিব’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফারুক আহমদ বলেন, ২০০৮ সালে সুইডেনের স্টকহোমে বিশ্ব পানি সপ্তাহ উদযাপন অনুষ্ঠানে গ্লোবাল হ্যান্ড ওয়াশিং পার্টনারশিপে সর্বপ্রথম হাত ধোয়া সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এ দিনটি উদযাপনের সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তী সময়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রতিবছর ১৫ অক্টোবর দিনটি উদযাপনের বিষয়টি অনুমোদিত হয়। পরবর্তীতে এর উদ্যোগী সংস্থা- FHI 360 (আমেরিকা ভিত্তিক একটি অলাভজনক মানব উন্নয়ন সংস্থা) ইউনিসেফ, ইউনিলিভার, ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন, প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বেল, বিশ্বব্যাংকের পানি ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রোগ্রাম এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থা (ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট)। প্রতিবছর বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্বের ২০ কোটিরও বেশি মানুষ গ্লোবাল হ্যান্ড ওয়াশিং ডে উদযাপন করে।
বিশ্ব হাত ধোয়া দিবসের মূল লক্ষ্য হল, সব দেশের মানুষকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার আওতায় নিয়ে আসা এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করা। প্রথমে স্কুলের শিক্ষার্থীরা এ ক্যাম্পেইনের মূল টার্গেট হলেও অল্প কিছুদিনের মধ্যে বিশ্বজুড়ে সব বয়সী মানুষের মধ্যে সাবান দিয়ে সঠিকভাবে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা এবং ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগ-প্রতিরোধের মাধ্যমে শিশুমৃত্যুর হার কমিয়ে আনাই এ প্রচারণার অন্যতম উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়ায়। সঠিকভাবে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে পারলে প্রায় ২০টি রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সাবান দিয়ে ছয় ধাপে হাত ধোয়া সম্পন্ন করলে জীবাণুমুক্ত হওয়া যায় মর্মে ইতিপূর্বে অভিজ্ঞজনরা মতামত ব্যক্ত করেছেন। প্রত্যেক পরিবারের শিশু সন্তানদের ছোটবেলা থেকেই মলমূত্র ত্যাগের পরে ও খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করাতে হবে। অনেক বাচ্চার অকারণে আঙুল চোষা, এমনকি স্থান-কাল ও বয়স নির্বিশেষে অনেকেরই যখন-তখন চোখ, মুখ, কান, নাকে হাত দেয়া ও ঘষা স্বভাবে পরিণত হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে গোয়াইনঘাট নির্বাহী অফিসার মোঃ নাজমুস সাকিব বলেন, উন্মুক্ত প্রান্তর বা খোলা জায়গায় মলমূত্র ত্যাগ পরিহার, পয়ঃবর্জ্যরে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটারি ল্যাট্রিন ব্যবহারে উদ্বুদ্ধকরণের মাস এটি। যেখানে-সেখানে মলত্যাগ, টয়লেটের বর্জ্য পাইপের মাধ্যমে খাল-বিল, নদী-নালা, ডোবায় ফেলার অভ্যাস থেকে আমরা আরও আগেই সরে আসতে পেরেছি। এখন পল্লী অঞ্চলেও সব পরিবারে অন্তত একটি হলেও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট পাওয়া যাবে। পুরো দেশই ১০০ শতাংশ স্যানিটেশন কভারেজের আওতায় এসে গেছে। এ ব্যাপারে আমরা প্রতিবেশী দেশগুলো অপেক্ষা অনেক বেশি এগিয়ে আছি।এটাকে ধরে রাখতে হবে, সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যাপারেও সচেতন হতে হবে। ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এগুলো প্রচার করতে হবে। আধুনিক বিশ্বব্যবস্থা ইদানিং ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও হাত ধোয়ার ওপর যথেষ্ট গুরুত্বারোপ করেছে এবং এর পক্ষে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণাও চালাচ্ছে।
আলোচনা সভায় এসময় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, গোয়াইনঘাট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) একেএম নূর হোসেন নির্ঝর’র গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাঃ গোলাম আম্বিয়া কয়েছ, গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাব সভাপতি এমএ মতিন, কার্যনির্বাহী সদস্য মো. আলী হোসেন প্রমূখ।