ক্রাইম প্রতিবেদক :: করোনা কালে সাহেদ করিম, সাবরিনা ও আরিফের প্রতরণা দেশজুড়ে আলোচিত হলেও এবার তাদের প্রতারণাকেও ছাড়িয়ে গেলেন সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার মাসুম আহমেদ সাঈদ । তিনি কোনো শিল্পপতি বা ব্যবসায়ীও নন অথচ জার্মানি ও বুলগেরিয়া থেকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে গত এক মাসে প্রায় দশ কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন। জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা এনএসআইয়ের সহযোগিতায় র্যাবের জালে আটকা পড়েছেন গোয়াইনঘাটের এই যুবক। পাসপোর্ট ও ভিসা জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। বাংলাদেশীদের পাশাপাশি প্রতারণার শিকার হয়েছেন বিদেশি নাগরিকরাও।প্রতারক মাসুম আহমদ সাঈদ’র গ্রামের বাড়ি গোয়াইনঘাট উপজেলার নবগঠিত পূর্ব আলীরগাঁও ইউনিয়নের ধর্মগ্রামে হলেও দীর্ঘদিন থেকে তারা স্ব-পরিবারে সিলেট নগরীর মেঝরটিলা এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছেন বলে জানা গেছে। তবে তাকে জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা এনএসআইয়ের সহযোগিতায় র্যাব কানাইঘাট থেকে আটক করেছে গত রোববার রাতে। মাসুমের পিতা কানাইঘাট মনসুরিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল আতাউর রহমান দীর্ঘদিন জামায়াতে ইসলামের সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করলেও বিগত কয়েক বছর থেকে খোলস পাল্টে আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে আসছেন । ছোটকাল থেকেই মাসুম এলাকার কারো সাথে উঠাবসা না করলেও তার প্রতারণার খবরে সবাই বিস্মিত হয়েছেন। সূত্র জানায়, মানব পাচারের মাধ্যমে জার্মানী, নিউজিল্যান্ড, কুয়েত, ক্রোয়েশিয়া, ইতালি, গ্রিস, মালয়েশিয়া, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশ থেকে এই অর্থ জমা পড়ে মাসুম আহমেদের ব্যাংক একাউন্টে। আর এ মানব পাচারের রুট হিসেবে তিনি ব্যবহার করেছেন নেপাল, দিল্লী, ভিয়েতনাম ও সৌদি আরব ও কম্বোডিয়ার আকাশপথ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাব-১৪ এর উপ-পরিচালক মেজর মো. ফজলে রাব্বি বলেন, আমরা এ ব্যাপারে একটি প্রেস ব্রিফিং করবো, এজন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রমাণ মেলে স্পেন, তুরস্ক, ইসরাইল ও ক্যামেরুন ছাড়াও ইউরোপের বিভন্ন দেশের ভিসা ও পাসপোর্ট জাল করতেন মাসুম। স্পেনের প্রতিটি পাসপোর্ট তৈরী করতে নিতেন দুই হাজার ইউরো। এর পাশাপাশি তিনি জড়িত অর্থ পাচারেও। অভিযানে জব্দ করা হয় তার ড্রাইভিং লাইসেন্স, নকল দুটি পাসপোর্ট আর তার নামে জারি করা সাতটি ব্যাংকের চেক বই। গত রোববার তাকে র্যাব আটক করে।
তদন্তে জানাযা, ৩৭ বছর বয়সী এই তরুণের ব্যাংক একাউন্টে এতো বিপুল পরিমাণ টাকা জমা পড়তে দেখে বিস্মিত তদন্তকারী কর্মকর্তারা। যেনো হঠাৎ করেই তিনি পেয়ে গেছেন আলাদীনের চেরাগ। দুই মাসে তার বিপুল পরিমান টাকা জমা পড়তে দেথে ধারণা করা হচ্ছে এর আগেও অনেক টাকা সরিয়ে নিয়েছেন তিনি। তবে ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখে চুখ কপালে উটেছে নিরাপত্তা সংস্থার। সংস্থাটির দাবী জিজ্ঞাসাবাদে আরোও চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসবে।এ বিষয়ে মাসুম আহমেদ এর পিতা কানাইঘাট মনসুরিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আতাউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
(পর্ব-১)