জৈন্তাপুর প্রচ্ছদ

জৈন্তাপুরে ত্রুমেই বাড়ছে যক্ষা রোগী..! প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন সচেতনতা

জৈন্তাপুর প্রতিনিধিঃ জৈন্তাপুর উপজেলায় যক্ষা রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বসে নেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র যক্ষা ও কুষ্ঠ রোগ নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। বিনা মূল্যে কফ পরীক্ষা ও ঔষধ সরবরাহ করছে সরকার। শুধু সচেতনতাই এ রোগ থেকে মুক্তির পথ। ২০১৮’র চেয়ে ২০১৯ সালে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৭৯জন। তবে শিশু রোগীর সংখ্যা কমেছে ২ জন। বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জৈন্তাপুর উপজেলার চা বাগানের ঘনবসতি বস্তি গুলোতেই যক্ষা রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশী।

এছাড়া হাঁচি-কাশির মাধ্যমে, অপুষ্টিতে ভোগে এমন লোকজন, যক্ষা রোগে আক্রান্ত এমন লোকের সাথে একত্রে বসবাস করে তাদেরই এই রোগ হওয়ার আশংকা বেশি থাকে। বিশেষ করে যক্ষা রোগে আক্রান্ত পরিবারের শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র যক্ষা ও কুষ্ঠ রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে ২০১৮ সালে জৈন্তাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের যক্ষা ও কুষ্ঠ রোগ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে ২৫৫৫জন রোগীর কফ্ পরীক্ষা করা হয়।

এর মধ্যে রোগজীবানু পাওয়া যায় ২৫৫ জন, কফ্ জীবানু মুক্ত ৯৭ জন হলেও এদেরকে পূনরায় এক্স-রের মাধ্যমে যক্ষারোগ সনাক্ত করা হয়। ফুসফুস বহিঃর্ভূত যক্ষারোগী ৫২জন , শিশু যক্ষারোগী ২৪ জন, মোট ৪শত ৪ জন রোগী চিকিৎসা নেয়। এর মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২জন রোগী মৃত্যুবরণ করেন। ২০১৯ সালে এই রোগের সংখ্যা বেড়ে জৈন্তাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কফ্ পরীক্ষা করতে আসে ২ হাজার ৮শ ১৪জন রোগী, এদের মধ্যে কফ্ েজীবানু পাওয়া যায় ৩শ ৭২জন, আর জীবানুমুক্ত পাওয়া যায় ৬৬জন, এদেরকে পুনরায় এক্স-রের মাধ্যমে যক্ষারোগের প্রাদুরর্ভাব ধরা পড়ে, ফুসফুসে বহিঃর্ভূত রোগী ৪৫জন এবং শিশু রোগী ২৮ জন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ১০ জন। চলতি বছরে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে ১জন শিশুসহ ১৯জন। জৈন্তাপুর উপজেলায় মাল্টি ড্রাগ রেজিসট্যান্স (এম.ডি.আর) মোট রোগী ১১জন। চিকিৎসা সমাপ্ত করে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন ৮জন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন ৩জন, এদেরকে সিলেট বিভাগীয় সংক্রামক বক্ষব্যাধি হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বড়দের মত শিশুদেরও যক্ষা রোগ হতে পারে যেমন, রোগিদের খুব কাছাকাছি থাকে এমন শিশুরাই এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা বেশী রয়েছে।

এক নাগাড়ে ২ সাপ্তাহের অধিক কাঁশি যক্ষার প্রধান লক্ষণ সাথে সাথে ওজন কমে যাওয়া, নিস্তেজ ও দুর্বল হয়ে যাওয়া, গলায় গুটির মতো ফুলে যাওয়া, মেরুদন্ড বাকা হয়ে যাওয়া ব্যাক্তিদের সাথে সাথে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর যক্ষা রোগ নির্ণয় কক্ষে এসে কফ্ পরীক্ষ করাতে হবে। সরকারী ভাবে বিনামূল্যে যক্ষা রোগের কফ্ পরীক্ষা ও চিকিৎসা প্রদান করা হয়ে থাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে । এব্যাপারে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আমিনুল ইসলাম সরকার’র সাথে আলাপকালে তিনি বলেন সময় মতো ডাক্তারের স্বরণাপন্ন হলে যক্ষা রোগ ভাল হয়। এক সময় প্রবাদ ছিল “যার হয় যক্ষা তার নাই রক্ষা” বর্তমানে চিকিৎসায় সম্পন্ন ভালো হয় যক্ষা রোগ।

এর জন্য রোগ ধরা পড়লে নিয়মিত পূর্ণ মেয়াদে চিকিৎসা নিতেই হবে, অন্যথায় এ রোগের প্রাদুর্ভাব পরিবার, সমাজে বিস্তার করার ঝুঁকি রয়েছে। আক্রান্ত রোগির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এ রোগের ভাইরাস ছড়াতে পারে। অপুষ্টিতে ভোগে, ঘনবসতিতে বসবাস করে বা যক্ষা রোগির সাথে একত্রিত বসবাস করেও এ রোগ হওয়ার আশংকা থাকে বেশি। আত্রুান্ত রোগীদের মধ্যে যাদের পরীক্ষা হাসপাতালে বাহিরে হয় তাদের টাকা সরকার থেকে প্রদান করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *