জৈন্তাপুর হোম

জৈন্তাপুর সীমান্ত দিয়ে অবাধে ভারতীয় গরু, মহিষ, মাদক বাংলাদেশে প্রবেশ হচ্ছে ! সংশ্লিষ্ট বাহিনীর নামে টাকা আদায়, প্রশাসন নিরর

জৈন্তাপুর প্রতিনিধি:: সিলেটের জৈন্তাপুর-লালাখাল সীমান্ত এখন চোরাকারীর নিরাপদ রোড। জৈন্তাপুর আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের সাথে গোপন চুক্তিতে চলছে অবৈধ ভারতীয় গরু-মহিষ ও মাদক, মটর শুটির রমরমা ব্যবসা। দিন রাত সমান তালে চলছে সীমান্তের অবৈধ পথে আসা গরু-মহিষ, মাদক দ্রব্য সহ আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য আসছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাঁচার করা হচ্ছে মটরশুটি, সোনার বার, মেলামাইন সহ নানা পণ্য। সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী সহ স্থানীয় প্রশাসনের নাটকীয় নিরবতায় জনমনে কৌতুহলের সৃষ্টি হচ্ছে। সচেতন মহলের দাবী চোরাকারবারীদের কাছে অসহায় প্রশাসন। কারন গোপন চুুুুক্তিতে বিরাট মাসোহারা দিয়ে চলে এসব ব্যবসা।জৈন্তাপুর উপজেলার লালাখাল রোড প্রধান চোরাকারবার রোড হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। এই রোড দিয়ে প্রতি রাতে যুদ্ধের সাজোয়া যান এর মত চলে চোরাই গাড়ির বহর। নষ্ট হচ্ছে রাস্তা ঘাট, প্রতিনিয়ত চোরাইপণ্য বহনকারী গাড়ীর ধাক্কায় সড়ক দূর্ঘটনা। কেউ প্রতিবাদ করলে হুমকি ধমকি এবং মাদক দিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট ধরে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। জানুয়ারী মাসে কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ভারতীয় গরু পাচারের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট করলে মুহুত্বে ভিডিওটি ভাইরাল হয়। তোলপাড় শুরু হয় উপজেলা জুড়ে। এনিয়ে উপজেলা আইন শৃংখলা সভায় ব্যাপক আলোচনা হয়। সীমান্ত নিয়ন্ত্রন করে সংশ্লিষ্ট বাহিনীর গঠন করা সোর্স বাহিনীর সদস্যরা। সোর্স বাহিনীর সদস্য সংখ্যা প্রায় ৩৫জন। বাহিনীর সদস্যরা চোরাকারবারীর নিকট হতে দিনের বেলায় গরু, মহিষ প্রতি ২০০০ টাকা এবং বাংলাদেশী মটরশুটি, ভারতীয় চাল প্রতি বস্তা ১২০টাকা হারে চাঁদা আদায় করা হয়। লালখাল সীমান্ত হতে প্রতিদিন গরু-মহিষ হতে প্রায় ২০লক্ষ টাকা আাদায় করা হয়। অন্যান্য ভারতীয় পণ্য ও বিভিন্ন ব্যান্ডের মদ-মাদক, কসমেট্রিক্স, বিড়ি-সিগারেট, মোবাইল হতে প্রায় ৫ হতে ১০ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়। প্রতিদিন উত্তোলিত টাকার ভাগ, বিভিন্ন বাহিনীর নিকট পৌছে দেওয়া হয়। জৈন্তাপুর উপজেলা সীমান্তের আলুবাগান, শ্রীপুর, মিলাটিলা, ছাগল খাউরী, কাঠালবাড়ী, কেন্দ্রী হাওর, ঘিলাতৈল, ফুলবাড়ী গৌরী শংকর, কমলাবাড়ী, গুয়াবাড়ী, হর্নি, বাইরাখেল, জালিয়াখলা, কালিঞ্জীবাড়ী, লালাখাল গ্রান্ড, লালাখাল চা-বাগান, আফিফানগর চা-বাগান, বাঘছড়া, জঙ্গীবিল, তুমইর, ইয়াংরাজা, বালিদাঁড়া, বাঘছড়া, সিঙ্গারীপাড় সহ প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকার জুড়ে চোরাকারবারীরা অবাধ বিচরণ করছে। সন্ধ্যা রাত হতে ভোর রাত পর্যন্ত ভারত হতে বাংলাদেশে পালে পালে হাজার হাজার গরু-মহিষ, মাদক সহ আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশ প্রবেশ করছে। স্থানীয়দের দাবী অবৈধ পথে ভারতে পাচার হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা ও স্বর্ণের বার। বিনিময় ভারত হতে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে ভারতীয় পাতার বিড়ি।মার্চ মাসের শুরু হতে উল্লেখিত সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে সরেজমিনের ব্যবসায়ী সেজে রাত ২টা হতে ভোর রাত ৬টা পর্যন্ত সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করে দেখাযায় চোরাকারবারী চক্রের সদস্যরা গরু-মহিষ সহ নানা নিষিদ্ধ পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশের চিত্র। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়োজিত সোর্সরা এবং সীমান্ত বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিতিতে জৈন্তাপুর উপজেলা সদরের পূর্ব বাজার, দরবস্ত বাজার, হরিপুর বাজার গরু-মহিষ প্রবেশ করছে। সরকারের একটি গোয়োন্দা সংস্থার গোপন প্রতিবেদন সূত্রে জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট এবং কানাইঘাট উপজেলার সীমান্ত এলাকা চোরাকারবারীদের উন্মুক্ত এবং নিরপাদ রোড হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে চোরাচালান ব্যবসার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের প্রাথমিক তালিকা ও ভারতীয় চোরাচালান চাক্রের সাথে সংশ্লিষ্ট সীমান্ত এলাকার প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তাদেরও চিহিৃত করা হয়েছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চোরাকারবারী দলের কয়েকজন সদস্য জানিয়েছেন, বিজিবিথর সাথে চুক্তি মারফত গরু-মহিষ বাংলাদেশে প্রবেশ করে। কোন কোন সময়ে ব্যবসায়ীরা কৌশলগত কারনে বিজিবিথর হাতে ৫ হতে ২০টি গরু-মহিষ মামলার জন্য তুলে দেন। তার বিনিময় ভারত হতে নিয়ে আসা হাজার হাজার গরু-মহিষ বাংলাদেশে প্রবেশের সুযোগ করে দিচ্ছে বিজিবি ও থানা পুলিশ। সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী, প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, উপজেলা ও জেলার গণমাধ্যমকর্মীর গণের প্রত্যেক ভারতীয় গরু-মহিষ সহ অন্যান্য পণ্যের বিষয় জানেন।জাতীয় গোয়োন্দা সংস্থার সাথে আলাপকালে জানা যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্য, উপজেলা ও জেলা নামদারী গণমাধ্যমকর্মীদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে চোরাকারবারীদের সাথে। অবৈধ পথে সীমান্ত এলাকা দিয়ে গরু-মহিষ আসার ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সীমান্তবর্তী বাসিন্দাগণ। আলোচনার মাধ্যমে সিলেট সীমান্তের চোরাই পথ দিয়ে ভারত হতে গরু-মহিষ, মোবাইল, হরলিক্স, ঔষধ, মদ, ফেন্সিডিল, ইয়াবা, বিভিন্ন ব্যান্ডের সিগারেট, কসমেটিক্স, সুপারী, নিম্ন মানের চা-পাতা, টাটা গাড়ীর পার্স, টায়ার, স্প্রীং, মটর সাইকেল বাংলাদেশে নিয়ে আসা হচ্ছে। অবাধে চোরাকারবার বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমান্তবর্তী গ্রাাম গুলিতে নানা অপকর্ম সংঘটিত হচ্ছে। জৈন্তাপুর-মেঘালয় সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ ও বিজিবি‘র নজরদারি এড়িয়ে চোরাকারবার ব্যবসা নিরাপদে পরিচালনা করা হচ্ছে। জৈন্তাপুর উপজেলা সদরের পূর্ব বাজার, দরবস্ত বাজার, হরিপুর অবৈধ ভাবে আশা ভারতীয় পশুর হাট পরিচালনা করা হচ্ছে। উপজেলা সদরে ভারতীয় অবৈধ গরুরহাট উপজেলা প্রশাসন হতে মাত্র ১০শত গজ দুরে অবস্থিত। অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদেই ভারতীয় পশুরহাট পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানা যায়। সীমান্ত এলাকায় চোরাকারবারীদের কয়েকটি শক্তিশালী নেটওর্য়াক সক্রিয় রয়েছে বলে জানাযায়।সচেতন মহল মনে করে ভারতীয় গরু-মহিষ দুদেশের রাষ্ট্রিয় পর্যায় আলোচনা স্বাপেক্ষে সীমান্ত এলাকার নির্দিষ্ট ক্যাম্প গুলোর আওতায় একটি করে রোড নির্বাচিত করে বৈধ ভাবে করিডোর স্থাপন করা হয় তাহলে সীমান্ত চোরাচালান কমে শতকরা ৫০-৭০% চলে আসবে। যার ফলে গরু-মহিষ আনার কৌশলে মাদক সহ অন্যান্য পণ্য চোরাকারবারীরা সীমান্তে প্রবেশ করতে পারবে না । ফলে মাদকের উপদ্রব কমে আসবে এবং এলাকার যুব সমাজ ধ্বংস হাত হতে রক্ষা পাবে। এছাড়া সীমান্তবতর্ী গ্রামগুলোর বাসিন্ধারা চোরাচালানের কবল গ্রাস হতে পরিত্রান পাবে। ১৯ বিজিবির লালাখাল কোম্পানী কামান্ডারের সাথে মোবাইল ফোনে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর মোবাইল ফোনে কথা বলা যাবে না, ক্যাম্পে দেখা করেন বলে ফোন রেখেদেন।জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মহসিন আলী জানান, মাদক নিমূলে পুলিশ তৎপর রয়েছে কিন্তু সীমান্তের বিষয়টি পুলিশের নয়। তার পরেও আমরা চোরাচালান নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করছি। আমাদের কোন সোর্সনেই। উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কামাল আহমদ বলেন, এ মাসের আইন শৃঙ্খলা বৈঠকে আমি উপস্থিত ছিলাম না। পূর্বের মাসের আইন শৃঙ্খলা ও চোরাচালান বৈঠকে সংশ্লিষ্ট বাহিনীর সদস্যদের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বলা হয়েছে। তিনিই আরও বলেন, আমরা সুন্দর জৈন্তাপুর দেখতে চাই। এজন্য সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সটিক ভাবে কাজ করা প্রয়োজন।
পর্ব- ১

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *