ডেইলি গোয়াইনঘাট ডেস্ক :: নিরাপত্তা বেষ্টনী আর থানা পুলিশের কড়া নজরদারিতে কোন প্রকার বিশৃংখলা ছাড়াই উৎসাহ উদ্দীপনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসবের প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়েছে শারদীয় দুর্গোৎসব। এর আগে মণ্ডপ গুলোতে চলে সিঁদুর খেলা, মন্ত্রপাঠ আর আনন্দ-উৎসব। হিন্দু সধবা নারীরা প্রতিমায় সিঁদুর পরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নিজেরা একে অন্যকে সিঁদুর পরিয়ে দেন। চলে মিষ্টিমুখ আর ঢাকের তালে তালে নাচ-গান। বুধবার (৫অক্টোবর) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে গোয়াইনঘাট উপজেলার ৩৬টি পূজা মন্ডপ থেকে প্রতিমা বিসর্জনের লক্ষ্য বিজয়ী শোভাযাত্রা বের হয়। উলুধ্বনি, খোল-করতাল-ঢাকঢোলের সনাতনী বাজনার সঙ্গে দেবী-বন্দনার গানের মধ্য দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ এই শোভাযাত্রায় অংশ নেন।প্রতিমা বিসর্জন দেখতে গোয়াইন নদী, চেঙ্গেরখাল নদী, সারী নদীর তীরে বেলা ২টা থেকেই ভিড় করেছেন দর্শনার্থীরা। প্রতিমা বিসর্জ্জনকে ঘিরে নানা পণ্যের মেলাও বসেছিল নদীর তীরে ও পূজা মন্ডপের আশপাশে। এর আগে দশমীর সকাল থেকে মণ্ডপ মণ্ডপে বাজতে শুরু করে বিষাদের সুর। চারদিনের দুর্গোৎসবের শেষে পুজোর পঞ্চম দিনে এসে শুরু হয় বিদায়ের আয়োজন। হিন্দু পুরনা মতে, বিজয়া দশমীতে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে মর্ত্য ছেড়ে কৈলাসে স্বামীগৃহে ফিরে যাবেন দুর্গতিনাশিনী দুর্গা। মর্ত্য ছাড়বেন দুর্গতিনাশিনী, ফিরবেন স্বামী গৃহ কৈলাশে। বছরের আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের পঞ্চমী তিথি থেকে দশমী তিথিতে জগজ্জননী ঊমা দেবী পিতৃগৃহ থেকে বেরিয়ে যান। মহাষষ্ঠীর দিন অকাল বোধনে স্বামীর ঘর কৈলাশ থেকে দেবীর অধিষ্ঠান হয়েছিল ঠাকুরঘরে বা পূজামান্ডপে। ষষ্ঠী থেকে দশমীর বিদায়ের সময় একদিকে আনন্দের জোয়ার, আবার অন্যদিকে বিষাদের সুর বাজে। আজ বিজয়া দশমী সকালে দশমী পূজার পর দর্পণ বিসর্জন করা হবে। শরতের শুক্লপক্ষে ভক্তের অকাল বোধনে মা-দুর্গা – দেবীলক্ষী, দেবী সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, কলা বৌ এবং মাথার উপর শিবকে নিয়ে স্ব-পরিবারে আসেন ধরাধামে বা মান্ডপে। সাথে থাকেন অসুর দুর্গার বাহন, সিংহ লক্ষীর বাহন, পেঁচা সরস্বতীর বাহন, শ্বেতহংস, কার্তিকের বাহন, ময়ূর গণেশের বাহন, ইঁদুর বিদায় বেলায় সকলকে নিয়ে মা উমা ফিরবেন কৈলাশে।
এদিকে বিকেল ৪টায় উপজেলার ঐতিত্যবাহী গোয়াইন নদী, চেঙ্গেরখাল নদী, সারী নদীতে উপজেলার বিভিন্ন মণ্ডপ থেকে নানা রংয়ে তৈরি মুর্তি নিয়ে এসে বিসর্জন করা হয়েছে। প্রতিমা বিসর্জন প্রত্যক্ষ করেছেন, গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফারুক আহমদ, গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তাহমিলুর রহমান ও থানার অফিসার ইনচার্জ কেএম নজরুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আফিয়া বেগম ও মাও. গোলাম আম্বিয়া কয়েছ, পশ্চিম জাফলং ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম, উপজেলা পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সুভাষ চন্দ্র পাল ছানা ও কোষাধক্ষ টিপু বাবু প্রমূখ। এছাড়াও শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষ্যে উপজেলার কেন্দ্রীয় শিব বাড়ী পুজা মন্ডপ পরিদর্শনের মাধ্যমে উত্তর ও দক্ষিন প্রতাপপুর, লুনি, জাফলং চা বাগান, রাধানগর ও নলজুরী পুজামন্ডপ পরিদর্শন করে ৩৬টি পূজামন্ডপে নগদ অর্থ প্রদান করেন নেতৃবৃন্দরা।
