Uncategorized

বন্যার কবলে গোয়াইনঘাট-জৈন্তাপুর পানি বন্ধি হাওরাঞ্চলের মানূষ ? পরিস্থিতির উত্তরণ না হলে দেখা দিতে পারে নানা ধরণের রোগ বালাই

ডেইলি গোয়াইনঘাট ডেস্ক :: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও মাত্রাতিরিক্ত ভারি বর্ষণের কারণে ফের বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে সিলেটের সীমান্তে অবস্থিত গোয়াইনঘাট-জৈন্তাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে দুটি উপজেলার নিচু এলাকার শত শত পরিবার। গো-খাদ্য সংকটে রয়েছে উপজেলার লক্ষ লক্ষ গরু, মহিস, মেসসহ নানাবিধ প্রাণী। বন্যা পরিস্থিতির উত্তরণ না হলে দেখা দিতে পারে মহামারিসহ নানা ধরণের রোগ বালাই এমন ধারণা বিশেষঞ্জদের।

গত মঙ্গলবার থেকে টানা ভারি বর্ষণ হওয়ায় উজান থেকে ঢলের পানি বেড়ে গোয়াইনঘাট-জৈন্তাপুর উপজেলার সিংহভাগ অঞ্চল প্লাবিত রয়েছে। এতে দুটি উপজেলার ছোট/বড় বিভিন্ন সড়ক তলিয়ে পানির নিচে রয়েছে। এ কারণে সড়কপথে সিলেট জেলা শহরের সঙ্গে গোয়াইনঘাট উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পাহাড়ি ঢলের পানি জাফলং এলাকার পিয়াইন নদী ও ডাউকি দিয়ে এলাকায় ঢুকছে। এতে গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ব জাফলং, আলীরগাঁও ইউনিয়ন, রুস্তমপুর, লেঙ্গুড়া, তোয়াকুল, নন্দীরগাঁও ও পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। যার কারণে উপজেলা সদরের সঙ্গে জেলা শহরে যাতায়াতের দুটি সড়ক সারী-গোয়াইনঘাট ও সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে গোয়াইনঘাট উপজেলা যাতায়াতের প্রধান দুই সড়কে পানি ওঠে। পানি বাড়তে থাকায় দুপুরের পর থেকে এসব সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রুস্তমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন শিহাব জানান, পাহাড়ি ঢলের কারণে বিছনাকান্দি পাথর কোয়ারি থেকে পাথর তোলার কাজ বন্ধ রয়েছে। এতে পাথর তোলার কাজে নিয়োজিত কয়েক হাজার শ্রমিক বেকার হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গোয়াইনঘাটে এবারের বর্ষা মৌসুমের শুরুতে এক দফা এবং গত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি আরেক দফা বন্যাকবলিত হয়। মঙ্গলবার রাতে প্রবল বৃষ্টি হওয়ায় সকাল থেকে জাফলংয়ের সারী নদী, পিয়াইন নদী ও ডাউকি নদী দিয়ে সীমান্তের ওপার থেকে পাহাড়ি ঢল নামা শুরু হয়। তৃতীয় দফায় শুক্রবার দুপুর থেকে ফের ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের কারণে গোয়াইনঘাট উপজেলার সাথে জেলা সদরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এছাড়াও শুক্রবার সকালের দিকে জৈন্তাপুরের সারী এলাকায় সারী নদীর পানি বেড়ে বাঘের সড়কের মুখ প্লাবিত হয়ে পড়ে। দুপুর ১২টার দিকে ওই সড়কের অন্তত ছয়টি স্থানে পানি উঠেছে। এতে সড়ক পথে  কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারেনি।

সড়কসহ আশপাশ এলাকা পরিদর্শন করে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজমুস সাকিব ডেইলি গোয়াইনঘাটকে জানান, বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পুরো উপজেলার নিচু এলাকা অবস্থিত বসত বাড়ি ও গোখাদ্যসহ নানাবিধ রোগ বালাই দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরো জানান, বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়া সড়কের যেসব স্থানে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে সেখানে নৌকা দিয়ে মানুষ যাতায়াত করছে। অপরদিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলার সবকটি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রান সহয়তা প্রদানে উপজেলা প্রশাসন তৎপর রয়েছে।

এ বিষয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদা পারভিন জানান, জেলা সদরের সাথে যোগাযোগের মূল সড়ক ( সিলেট তামাবিল হাইওয়ে রোড) দিয়ে উপজেলা সদরের সাথে যোগায়োগ সচল রয়েছে। কিন্তু উপজেলার প্রত্যান্ত এলাকার ছোট/বড় সড়ক পানির নিচে রয়েছে। উপজেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে সকল ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে। সেই সাথে পানি বন্ধি মানুষের মাঝে ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত আছে।

উল্লেখ্য রাত সাড়ে ৯টায় এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *