স্টাফ রিপোর্টার:: সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলাস্থ পিরিজপুর সোনারহাট রাস্তা যেন কৃষকের ক্ষেতের জমি..! স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার পানি নামার আড়াইমাস অতিবাহিত হলেও মেরামত কাজ শুরু করতে পারছেন উপজেলা প্রকৌশলী। যোগাযোগ করলে শুধু এক সপ্তাহ পর হবে এমন আশ্বাসে আড়াই মাসেও শেষ হচ্ছে না সপ্তাহ। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মানব বন্ধনেও টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের। রোজ এরাস্থা দিয়ে অর্ধলাক্ষাধিক পথচারী ও বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দূর্ভোগের অন্ত সীমাহীন ছাড়িয়ে গেছে।জানাযায়, উপজেলা সদর ইউপির পিরিজপুর সোনারহাট রাস্তার গোয়াইনঘাট সরকারী কলেজ থেকে প্রায় দেড় কিঃমিঃ রাস্তা মেরামত কাজ শুরু হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসের মাঝামাঝি সময়ে। এতে ১কোটি ১০লক্ষ টাকা ব্যায়ে এলজিইডির তত্ত্বাবধানে শাওন এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করে। কাজের ধীরগতি ও সঠিক তদারকির অভাবে মেরামত কাজ বন্যার কবলে পড়ে বিধ্বস্ত হয়ে রাস্তার অনেক অংশ বিলিন হয়ে যোগাযোগ ব্যাবস্থা অনুপযোগী হয়ে পড়ে। যার কারণে গোয়াইনঘাট কলেজ থেকে উনাই হাওরের প্রথম ব্রীজ পর্যন্ত মরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছে। বিপর্যস্থ রাস্তা সংস্কার কাজ নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ রফিকুল ইসলামের সাথে কয়েক দফা আলাপ করলেও তিনি বিষয়টি নিয়ে কোন কর্ণপাত করেননি। এদিকে রাস্তা সংস্কার না হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের অধ্যায়ন,পথচারী, যাত্রী ও পন্যসামগ্রিই পরিবহনসহ উপজেলা সদরের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। উত্তর গোয়াইনঘাটের কয়েকটি বাজারে দেখা দিয়েছে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের দরকারী নিত্য পন্যের সংকট। যোগাযোগ ব্যাবস্থা অনুপযোগী হওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরা শহর থেকে মালামাল পরিবহনে মারাত্মক দূর্ভোগে রয়েছেন। বিগত ২৮জুন পুরানো বাস স্ট্যান্ড থেকে গোয়াইনঘাট কলেজ পর্যন্ত রাস্তাটি স্বেচ্ছাশ্রমের উদ্যোগ নিয়ে যান চলাচলের উপযোগী করেন গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তাহমিলুর রহমান। কিন্তু বাকী অংশটুকু মরণফাঁদে উপনীত হওয়ায় স্থানীয় এলাকাবাসি স্বেচ্চাশ্রমে মেরামতের উদ্যোগী হলেও করতে মেরামত কাজে বাধা দিচ্ছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শাওণ এন্টারপ্রাইজ। সর্বশেষ মঙ্গলবার আবারও উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ রফিকুল ইসলামের সাথে কথা হলে (আগামী সপ্তাহে কাজ ধরা হবে) তিনি সেই পূরানো কথাই বলে দিন পার করছেন। প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম আরোও জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শাওণ এন্টার প্রাইজকে ২০থেকে ২৫লক্ষ টাকা বিল দেয়া হয়েছে খুব শীগ্রই কাজ শুরু করা হবে ।
রাস্তা মেরামতের দাবীতে অন্তহীন দূর্ভোগের শিকার হয়ে গোয়াইনঘাটের সাধারন শিক্ষার্থী ও ভুক্তভোগীরা (১আগস্ট) বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনসহ প্রশাসনের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করলে। পর দিনই জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী সরেজমিন পরিদর্শনে আসলে আশার আলো দেখেছিল স্থানীয়রা। কিন্তু পরিদর্শনকালে আগামী সপ্তাহে কাজ শুরুর আশ্বাস দিলেও আজও সেই প্রত্যাশিত সপ্তাহ আসেনি। অপরদিকে উন্নয়ন অগ্রযাত্রার লক্ষ্য নিয়ে ঐ রাস্তার উনাই হাওরের ব্রীজ ভাঙ্গার সময়ে কোন বিকল্প রাস্তার ব্যাবস্থা না থাকার ফলে দীর্ঘ সময়ের জন্য ঐ রাস্তার যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের তোপের মুখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শাওণ এন্টার প্রাইজ ক্ষেতের জমি দিয়ে বিকল্প রাস্থা তৈরি করলেও অতিবৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে বিকল্প রাস্তাটি টিকেনি বেশিদিন। বৃষ্টি আর আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে বন্যাকালিন সময় এবং এর কিছুদিন পর পর্যন্ত বসনো হয় খেয়া ব্যাবস্থা যার অর্থদন্ড চাপানো হয় স্থানীয় পথচারীদের ঘাড়ে! এলাকার গর্ভবতী মায়েরা জরুরী চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অহরহ। অবর্নীয় এ দূর্ভোগে উত্তর গোয়াইনঘাটের হাজারও মানুষ এখন যোগাযোগের ক্ষেত্রে সেই আশির দশকে ফিরে গেছেন! আর প্রকৌশলী শুধু আশ্বাসই দিচ্ছেন বাস্তবে এর কার্যক্রম নেই জনসাধারনের দুঃখ লাঘবে। আর প্রতিদিনের দূর্ভোগে এলাকাবাসির মনে চাপা ক্ষোভ সঞ্চারিত হচ্ছে। কেউ কেউ রাস্তা সংস্কারে কর্তৃপক্ষের জরুরী ব্যবস্থা গ্রহনের আশা নিয়ে আজ-ও পথ চেয়ে আছেন।
