গোয়াইনঘাট হোম

রাতারগুলে ক্যারলের বিরুদ্ধে নৌকা মাঝিদের মানব বন্ধন !! অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ পর্যটকদের

ডেইলি গোয়াইনঘাট ডেস্কঃ রাতারগুলে ক্যারল নামের চাঁদা আদায় সংস্থার বিরুদ্ধে রাতারগুল নৌকা ঘাটের মাঝিরা মানববন্ধন করেছেন। অপরদিকে, অতিরিক্ত টাকা আদায় অভিযোগ করেছেন পর্যটকরা। দেখা যায়, পর্যটকদের সুবিধা দেওয়ার চিন্তা নেই কারো। সংশ্লিষ্ট সবাই শুধু ব্যস্ত, কিভাবে পর্যটকদের কাছ থেকে টাকা অাদায় করা যায়। সম্প্রতি,সরেজমিনে এমন অনাকাংখিত অবস্থা লক্ষ্য করা গেছে সিলেটের আমাজন খ্যাত পর্যটন কেন্দ্র রাতারগুলে।জানা যায়,এখানে পর্যটকদের নিকট থেকে টাকা আদায় করার জন্যে রাতারগুল ঘাট, মঠরঘাট ও চিরঙ্গীঘাট নামে তিনটি প্রবেশ পথ রাখা হলেও রাতারগুল ঘাটের অাশ পাশে পর্যটকদের গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা নেই। এমনকি,অস্থায়ী ভাবেও কোন দোকান পাট তৈরি করতে দিচ্ছে না বনবিট কর্তৃপক্ষ। এমন অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কোন শৌচাগার নেই এখানে। অথচ, তিন প্রবেশ পথেই আগন্ত পর্যটকদের থেকে টাকা আদায় করার জন্যে চেয়ার টেবিল সাজিয়ে রশীদ বই ও কলম নিয়ে কর্তৃপক্ষ পরিচয়ে বসে রয়েছেন গ্রুপ গ্রুপ হয়ে। বন কর্মকর্তা আব্দুল ওদুদের নেতৃত্বে চলছে এ সব টাকা আদায়। পর্যটকদের নিকট থেকে নৌকা প্রতি ৮০০ টাকা ও প্রবেশ ফি বাবদ জনপ্রতি ৫৭ টাকা করে অাদায় করছেন। এ বিষয়ে রাতারগুল বনবিট কর্মকর্তা আব্দুল ওদুদ বলেন, পর্যটকদের সুবিধা বিবেচনায় হলেও বনবিট এলাকায় অস্থায়ী টং দোকানের জন্যে স্থান বরাদ্দ দেওয়া বা গাড়ি পার্কিংয়ের জন্যে জায়গা ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার এখতিয়ার তাঁর নেই।এদিকে, স্থানীয়দের সাথে আলাপ কালে অনেকে জানান, বাগবাড়ি ও রামনগর গ্রামের ২৬জন নৌকা মাঝি কে রাতারগুল নৌকা ঘাটে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এ নিয়ে রাতারগুল ও রামনগর-বাগবাড়ি গ্রামবাসীর মধ্যে গত কিছু থেকে মনোমালিন্য চলছে। ৩অক্টোবর সিলেট প্রেসক্লাবে এমন অভিযোগ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বাগবাড়ি- রামনগর গ্রামের ভুক্তভোগী নৌকা মাঝিরা।মটরঘাটে ইজারাদার পরিচয়ে আনছার মেম্বার বলেন, ক্যারল নামের চাঁদা আদায় কমিটি সম্পূর্ণ ভোয়া একটি সংস্থা এবং এটা মুলতঃ টাকা লুটপাট কমিটি। পর্যটকদের নিয়ে অাসলে প্রত্যেক গাড়ি ড্রাইভার কে বকশিস বাবদ ৪০০ টাকা দেওয়া হয়। এই টাকার যোগান দিতে নৌকা ভাড়া দেখিয়ে ৮০০টাকা আদায় করা হয় । এর থেকে নৌকা মাঝি পান মাত্র ১৫০টাকা। এই অনিয়ম বন্ধ করার জন্যে কেউ এগিয়ে আসছেন না। সম্পুর্ন টাকাটা তো পর্যটক থেকে কৌশলে আদায় করা হচ্ছে। এটা কেন? এ ব্যাপারে কেউ কথা বলছেন না। নানা রকম ফি দেখিয়ে পর্যটক থেকে বেশী টাকা আদায়ের কারণে দূুর দূরান্ত থেকে পরিবার পরিজন ও বন্ধু বান্ধবদের কে সাথে নিয়ে পর্যটকরা এখানে এসে অসহায় ও বিব্রতবোধ করছেন। এ সব দেখবে কে এখানে? সবাই টাকা অাদায় ব্যস্ত। অবিলম্বে তা বন্ধ না হলে খুব কম দিনের মধ্যেই রাতারগুল পর্যটক আকর্ষন হারাবে।সুমন নামে নোয়াখালী থেকে আগত এক পর্যটকের সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তিনি জানান, তারা তিন বন্ধু এসেছেন রাতারগুল বেড়াতে। সবাই ছাত্র। তাদের কে ৮০০ টাকা দিয়ে একটি নৌকা ভাড়া নিতে হয়েছে এবং প্রবেশ ফি বাবদ প্রত্যেক কে থ জনপ্রতি অারো ৫৭ টাকা করে তাদের থেকে নেওয়া হয়েছে। অথচ, পার্শ্ববর্তী পর্যটন স্পট ভোলাগঞ্জ সাদা পাথরে সেখানে তাদের জনপ্রতি মোট ১০০ টাকা লেগেছে। বিছানাকান্দি পর্যটন স্পটে যেতে অানফরের ভাঙ্গায় নৌকা মাঝি কে মাত্র ৫টাকা করে দিয়েছেন। তিনি রাতারগুলে বেশী টাকা অাদায়ের অভিযোগ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

জানাযায়, রাতারগুল ব্যবস্থাপনা কমিটি নামে রশীদ দেখিয়ে পর্যটকদের হতে তিন ঘাট থেকে প্রতি দিন অায় করা হয় লক্ষাধিক টাকা। এ সব টাকা কোথায় যাচ্ছে? এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে কথা বলতে কেউ রাজি হননি।পর্যটন কেন্দ্র রাতারগুলের অনিয়ম নিয়ে রাতারগুল পর্যটনের উদ্যোক্তা, গোয়াইনঘাট উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান সাংবাদিক আনোয়ার হোসাইন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ২০১০ সালে রাতারগুল গ্রামবাসী কে সাথে নিয়ে আমরা কয়েকজন অনেক কষ্ট করে, মিটিং করে,লিফলেটিং করে,পর্যটন নৌকার উদ্বোধন করে, পর্যটক যাতায়াতে সুবিধা দেখিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালাই। সাংবাদিক অনেকে তখন সহযোগীতা করেছেন। ফলে রাতারগুল জাতীয় পর্যায় থেকে আন্তর্জাতিক মহলে সাড়া জাগায়। এর আগে রাতারগুল পর্যটন কেউ জানতই না। বহু কষ্টের রাতারগুলে এখন যারা দুর্নাম করছেন, তাদের বিরুদ্ধে সচেতন মহল সবাই কে সোচ্চার থাকতে হবে। অন্যায় অনিয়মে সেখানে কোন ছাড় না দেওয়ার আহবান জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *