ডেইলি গোয়াইনঘাট ডেস্ক :: ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে জাফলং সংগ্রাম ক্যাথলিক মিশনে পালিত হল খ্রীষ্টীয় ধর্মের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শুভ বড়দিন। এ-উপলক্ষে দিনটি বিভিন্ন কর্মসুচীর মধ্য দিয়ে সমাপ্ত করল খসিয়া আদিবাসীরা। শুভ বড়দিন উপলক্ষে জাফলং খাসিয়া আদিবাসী পল্লিতে উৎসব‘র আমেজ বিরাজ করেছিল। সংগ্রাম ক্যাথলিক মিশনটি সাজ সাজরব লক্ষ্য করা গেছে। বড়দিন উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসুচীর মধ্যে ছিল শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে জাফলং সংগ্রামপুঞ্জি, নকশিয়া পুঞ্জি, লামাপুঞ্জি, প্রতাপপুর পুঞ্জিসহ আদিবাসী পল্লী এলাকায় বর্নাঢ্য শুভযাত্রা। শনিবার রাত ১০টায় সংগ্রাম ক্যাথলিক মিশনে কৃষ্ণযাগ এবং রাত ১টায় যীশু খ্রীষ্টের জন্মদিন উপলক্ষে আনুষ্ঠানিক কেক কাটা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। পরদিন রবিবার দুপুর ১টায় সংগ্রাম ক্যাথলিক মিশনে শেষ প্রার্থনা ও কৃষ্ণযাগ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়ে বেলা ২টায় দিবসের সমাপনি অনুষ্ঠান পালিত হয়েছে। রবিবার জাফলং খাসিয়া পুঞ্জি (আদিবাসী) এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বড়দিন উপলক্ষে সকল আদিবাসীরা উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শুভ জন্মদিন পালন করেছেন। একে অপরের প্রতি কোশল বিনিময় করেন এবং তাদের মাঝে ছিল আলাদা আনন্দ‘র বন্যা। নারী পুরুষ, যুবক যুবতি ও শিশুরা সবাই তাদের সংস্কৃতির জামা কাপড় পরে পুরো পুঞ্জি এলাকায় আনন্দে মেতে উঠে। পাশাপাশি ঐদিন পুঞ্জি এলাকায় পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যনীয়। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পর্যটকরাও বড়দিন উৎসবে যোগ দিয়ে অনুষ্ঠানকে আরোও অতিরিক্ত সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেন এবং অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করেন। এছাড়া সংগ্রাম ক্যাথলিক মিশনকে আলাদা রঙে সাজিয়ে রেখেছিলেন আদিবাসী নেতৃবৃন্দ। আদিবাসী লোকদের মধ্যে উৎসব‘র আমেজ বিরাজ করছিল ব্যাতিক্রমধর্মী। ঐসকল অনুষ্ঠানও প্রার্থনা পরিচালনা করেন সংগ্রাম ক্যাথলিক মিশনের পুরোহিত ফাদার কল্লোল রোজারিও।এদিকে শনিবার রাত ১২টায় নকশিয়া পুঞ্জি ক্যাথলিক মিশনে উপস্থিত হয়ে সিলেট জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল আল মামুন এবং জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি বিশাল আকৃতির কেক উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ কেএম নজরুল ইসলাম। এ-সময় উপস্থিত ছিলেন মিশন‘র পুরোহিত ফাদার কল্লোল রোজারিও, সংগ্রাম ক্যাথলিক মিশন‘র সাধারন সম্পাদক ও খাসিয়া পনরয় সমাজ কল্যান সংস্থার সভাপতি ওয়েলকাম লম্বা, সিস্টার মেরী তৃষিতা, সিস্টার মেরী রোজেন, জশুয়া, এডুইন, ঝলমল, ও জেনসন প্রমূখ।
মিশন‘র পুরোহিত ফাদার কল্লোল রোজারিও বলেন, সকলের সহযোগিতায় অনুষ্ঠান সুন্দর ও সফল হয়েছে। সকলের সহযোগিতায় আমাদের ধর্মীয় সর্বোচ্চ উৎসব বড়দিন পালন করতে কোন সমস্যা হয়নি। এখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সহযোগিতা পেয়েছি। শান্তি শৃংখল ভাবে অনুষ্ঠান পালন হয়েছে। এই অনুষ্টানে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা করা হয়েছে। এছাড়াও ঢাকা থেকে আসা এক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র,জয়নাল, রুবেল, আশিক, মঈনুল ইসলাম, জান্নাতুল ফারিয়া, জানান, আজ জাফলং বেড়াতে এসে ভাগ্যক্রমে বড়দিনে অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ হলো। তাই ভ্রমনের সাথে আলাদা আনন্দ উপভোগ করলাম। আরেক ছাত্রনেতা শাহাব উদ্দিন বলেন আগে জানতাম না বড়দিনের অনুষ্ঠান উপভোগ করব এখানে এসে মনের মাঝে নতুন এক আনন্দ পেয়েছি।
