হোম

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফ্যাক আইডি খুলে প্রেম ! হোটেলে অন্তরঙ্গ মুহুর্তের আহবান অতঃপর খুন-২ঘন্টার মধ্যে ঘাতক আটক

গোয়াইনঘাট (সিলেট) প্রতিনিধি:: সিলেটের গোয়াইনঘাটে হাত পা বাধা অবস্থায় একটি লাশ পাওয়া গেছে। শ্বাসরুদ্ধ করে তাকে হত্যা করে ফেলে রাখা হয় সীমান্তবর্তী একটি টিলায়। দির্ঘ সাত মাসের প্রেমে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয় তাদের এর মধ্যে দুজনের চ্যাটিং ও  অত:পর জাফলংয়ে এনে মুক্তিপন না দেয়ায় তাকে হত্যা করা হয়। হত্যা কান্ডের স্বীকার ব্যক্তির নাম কাউছার আহমদ রাজু (৩৫) সে সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার কালাম বহরপুর গ্রামের আব্দুল বাছিদের ছেলে। ঘাতকের নাম শামছুল ইসলাম (৩০) সে চাপাই নবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার দাদনচক মিয়াপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে এবং এলাকায় সে একজন চিহ্নিত প্রতারক ও দাগী অপরাধী। ঘাতক শামছুল চলতি মাসের ৯তারিখে জাফলং মামার বাজারস্থ হোটেল মেঘালয়ে সরকারি একটি বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে অবস্থান করে। ঘাতক শামছুলের কাছ থেকে ৪টি মোবাইল ফোন ১টি খেলনা পিস্তল, ১টি কম্পিউটার হার্ডডিস্ক উদ্ধার করা হয়। পেশায় শিক্ষক নিহত কাউছার আহমদ রাজুর সাথে মোবাইল ফোনে ফ্যাক আইডি( ছামিয়া জাহান) মেয়ে পরিচয়ে চ্যাটিং করে। গতকাল তাকে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া থেকে জাফলং মামার বাজারস্থ হোটেল মেঘালয়ে দেখা করার আমন্ত্রন করে ঘাতক ছামছুল। এখানে আসার পর হোটেল কক্ষে মেয়ে পরিচয় দাতা ব্যক্তি মেয়ে নয় জেনে প্রতিবাদ করলে ঘাতক শামছুল তাকে মারপিট করে দুইলক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করলে হত্যা কান্ডের স্বীকার ব্যক্তির নাম কাউছার আহমদ রাজু দুইলক্ষ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে রাত ৯থেকে ১০টার দিকে ফিল্মি স্ট্যাইলে হোটেল থেকে ভিকটিম কাউছার আহমদ রাজুকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে একটি ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সা যোগে সংগ্রাম বিজিবি ফাড়ির অদূরে একটি টিলায় নিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। হত্যাকান্ডের পর সে পূনরায় মামার দোকান মেঘালয় হোটেলে অবস্থান করে।এদিকে স্থানীয়দের মাধ্যমে সীমান্ত এলাকায় একটি লাশ পড়ে থাকার খবর ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে যান গোয়াইনঘাট সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার প্রবাস কুমার সিংহ, থানা অফিসার ইনচার্জ কে.এম. নজরুল ইসলাম, ইন্সপেক্টর তদন্ত ওমর ফারুক মোড়লসহ পুলিশ সদস্যরা। এ সময় নিহত ব্যক্তির ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, সুরতহাল সহ লাশ উদ্ধার করা হয়। মোবাইল ফোন সূত্রে নিহতের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়। একাধিক সূত্র ও তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে লাশ উদ্ধারের ২ঘন্টার ভিতরেই ঘটনায় জড়িত ঘাতক শামছুল ইসলামকে হোটেল মেঘালয় থেকে গ্রেফতারে সক্ষম হয় গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ।এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় গোয়াইনঘাট থানায় শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিস্থারিত ব্রীফিং করে সিলেট জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম সাংবাদিকদের জানান, ধৃত শামছুল একজন পেশাদার অপরাধী এবং আইটি এক্সপার্ট। চলতি মাসের ৯তারিখে সে জাফলংয়ের একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান নিয়ে এলাকায় একটি বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে অবস্থান নেয়। ধৃত অপরাধী মোবাইল ফোনে নিহতের সাথে ফ্যাক আইডি দিয়ে পরিচয় এবং তাকে জাফলং এনে মোটা অংকের টাকা দাবী করেছিল। টাকা এবং তার কথা মত না চলার কারণে ফিল্মি স্ট্যাইলে জিম্মি করে হোটেল রুম থেকে ভিকটিমকে ১টি ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সায় করে সীমান্ত এলাকায় একটি পাহাড়ে নিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতীয়মান হয়েছে। ধৃত শামছুল একজন পেশাদার ও দাগী অপরাধী। তার ব্যাপারে আরও খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। তার কাছ থেকে ৪টি মোবাইল ফোন, ১টি খেলনা পিস্তল, ১টি কম্পিউটার হার্ডডিস্ক উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আরও জড়িত আছে কি না তা তদন্থাধীন রয়েছে। এদিকে নিহতের লাশ উদ্ধার পরবর্তী ময়না তদন্তের জন্য সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেলে কলেজে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান অপরাধ দমনে পুলিশ সব সময় জিরো ট্রলারেন্স নীতি অনুসরণ করে। এই হত্যা কান্ডে লাশ উদ্ধারের ২ঘন্টার ভেতরেই ঘাতককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *