জৈন্তাপুর প্রতিনিধি:: জৈন্তাপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে সার্ধশতবর্ষ অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ এম.পি বলেছেন সাহিত্য সংস্কৃতি বিকাশে নতুন প্রজন্ম-কে অনুপ্রারণিত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে জৈন্তাপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সার্ধশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে দুই দিন ব্যাপী নানা অনুষ্ঠান উদ্বোধন করা হয়েছে। ১৮ জানুয়ারী শনিবার সকাল ১০টায় জাতীয় সঙ্গীত ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাতীয় সংসদ সদস্য ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এম.পি ও বিশেষ অতিথি সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
দুই দিন ব্যাপী প্রাক্তন ছাত্র/ছাত্রীর অংশ গ্রহনে র্যালী,স্মৃতি চারণ, স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন, শিক্ষা বিষয়ক সেমিনার স্থানীয় এবং ঢাকার শিল্পীদের অংশ গ্রহনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রয়েছে। অনুষ্ঠান উপলক্ষে একটি স্মারক স্তম্ভ উদ্বোধন করা হয়েছে। সার্ধশতবর্ষ অনুষ্ঠান উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৯টায় উপজেলা সদরে এক শুভা যাত্রা বের করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, সরকার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। জৈন্তাপুর উপজেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একাডেমিক ভবন নিমার্ণ ও কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হচ্ছে। দক্ষ মানব সম্পদ তৈরী করতে জৈন্তাপুর উপজেলায় টেকনিক্যাল প্রশিক্ষণ সেন্টার স্থাপন করা হবে। তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের অনেক অবদান রয়েছে। চলিত বছর-কে সরকার মুজিবশতবর্ষ হিসাবে পালন করবে। এই দেশের একজন নাগরিক হিসাবে মুজিবশত বর্ষে সকল কর্মসুচিতে অংশগ্রহন করার আহবান জানান। তিনি জৈন্তাপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সার্ধশতবর্ষ অনুষ্ঠান আয়োজন করায় প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে সবরকম সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, জৈন্তাপুর উপজেলা কে শিক্ষার উন্নয়নে এগিয়ে নিতে শতবর্ষে আগে এই এলাকার গুনিজন এখানে একটি স্কুল স্থাপন করার ফলে আজ অনেক গুনীজন জন্ম গ্রহন করেছেন। তিনি জৈন্তাপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় সার্ধশতবর্ষ অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
বিশেষ অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড.নাসরিন আহমদ বলেন, স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছরে দেশ অনেক এগিয়ে গেছে। আমাদের নতুন প্রজন্ম -কে মানবিক ও নৈতিক শিক্ষা অর্জন করে দেশের কল্যাণে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় ছেলে-মেয়েদের নৈতিকতাবোধ শিক্ষা অর্জনে অভিভাবকদের গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিলেট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মজিদুল ইসলাম, বিদ্যালয়ের প্রাত্তান ছাত্র (অব:) বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো: নুরুল হক, (অব:) বিগ্রেডিয়ার জেনারেল জয়ন্ত কুমার সেন, জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল আহমদ, উপজেলা নিবার্হী অফিসার নাহিদা পারভীন,উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সিরাজ উদ্দিন আহমদ, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যোন আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীন , সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লি:এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী আলী ইকবাল মো: নুরল্লাহ, , উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পলিনা রহমান, জেলা শিক্ষা অফিসার অনিল কৃষ্ণ মজুমদার, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লি:-এর মহা-ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) শওকত আলম কাদরী, জৈন্তিয়া ১৭ পরগনা সালিশ সমন্বয় কমিটির সভাপতি আবু জাফর আবুল মৌলা চৌধুরী, জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার (ইনচার্জ) শ্যামল বনিক, জৈন্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এখলাছুর রহমান , পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান লেবু ,জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি সাহেদ আহমদ প্রমুখ সহ উদয়াপন কমিটির সভাপতি দেলোয়ার আহমদ মাসুক এর সভাপতিত্তে দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রাক্তণ ছাত্র/ছাত্রীদের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষর্থীরা তাদের স্মৃতি চারণ করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জৈন্তাপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহানা জাফরীন রোজি। সভাপতিত্ব করেন সার্ধশতবর্ষ উদযাপন কমিটির সভাপতি দেলওয়ার আহমদ মাসুক। শুভচ্ছো বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠান বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব উপ-সহকারী প্রকৌশলী হেলাল আহমদ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আমিনুর রশিদ ও সাবেক ছাত্রনেতা হাসিনুল হক হুসনু। বৃহত্তর জৈন্তিয়ার প্রথম সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় হিসাবে ১৮৬৭ সালে জৈন্তাপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। সার্ধশতবর্ষ অনুষ্ঠান উপলক্ষে ৫৯ ব্যাচের ১০২০জন প্রাক্তন ছাত্র/ছাত্রী রেজিষ্টেশন সম্পন্ন করেন। সার্ধশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে উপজেলা সদরের বিভিন্ন রাস্তাঘাট পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা করে উপজেলা সদর -কে বর্ণিল আলোক সজ্জা করা হয়েছে।