ডেইলি গোয়াইনঘাট ডেস্ক:: গত দুই সপ্তাহ ধরে বেতন না পাওয়া, প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত বকেয়ার তৃতীয় কিস্তি না পাওয়াসহ ৭ দফা দাবিতে সিলেটের তারাপুর চা বাগানের শ্রমিকদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) থেকে আন্দোলন জোরদার করতে কর্মবিরতির পাশাপাশি অবস্থান, বিক্ষোভ মিছিল ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারাপুর চা বাগান শ্রমিক ও পঞ্চায়েত কমিটি।
তারা জানান, অবস্থার উন্নতি না হলে তারা বুধবার থেকে নয়া কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। এদিকে গত শনিবার থেকে চা বাগান শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে শুকনো মৌসুমে চা গাছের ‘কলম’ বন্ধ থাকায় চা উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। চা শ্রমিকদের সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে দুই সপ্তাহের মজুরি প্রদান, এরিয়ার বিলের তৃতীয় দফার টাকা প্রদান, অবসরের টাকা প্রদান, প্রতি মাসে প্রভিডেন্ট ফান্ডের (ভবিষ্য তহবিল) টাকা জমা দেওয়া, ঘরবাড়ি মেরামত করে দেওয়া, পানির সমস্যা সমাধান ও বাগানে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা। বাগানের শ্রমিকেরা জানান, দুই সপ্তাহ বেতন বন্ধ থাকায় তারা অসহায় হয়ে পড়েছেন। অনেকের বাড়িতে খাবারের সংকট। বেতন না পাওয়ায় পৌষ সংক্রান্তিও পালন করতে পারেননি তারা। তারাপুর চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুনীল মোদীর মেয়ে সোমা মোদী বলেন, বার বার মজুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছি। পাশাপাশি বিক্ষোভ মিছিলও করেছি। তারাপুর চা বাগানের শ্রমিক তারুনী মোদী বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে ঘরে ঘরে খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, বাগান বন্ধ থাকুক এটা চাই না, বাধ্য হয়ে আন্দোলনে গেছি। অপর শ্রমিক বেলী রায় বলেন, বেতন বকেয়া থাকায় সন্তানদের স্কুলে ভর্তি যেমন করতে পারিনি, তেমনি নতুন ক্লাসের বইও কিনে দিতে পারছি না। পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুনীল মোদী জানান, কর্তৃপক্ষের বার বার বেতন আটকে দিচ্ছেন। এতে শ্রমিকদের নানান সংকট বাড়ছে। পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি চৈতন্য মোদী জানান, গত ২ সপ্তাহ ধরে শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বকেয়া বেতনের সব কিস্তিও অন্যান্য বাগানে পরিশোধ করা হলেও আমরা শেষ কিস্তি পাচ্ছি না।
অন্যদিকে বাগান কর্তৃপক্ষ বলছেন, বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে সোমবার বৈঠকে বসা হয়। কিন্তু বৈঠকে উপস্থিত হননি তারাপুর বাগানের চা শ্রমিক আন্দোলন ও পঞ্চায়েত নেতারা। সোমবারের বৈঠকে তারা কেন যাননি- এ বিষয়ে সোমা মোদী কিছু বলতে পারেননি। চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, সমন্বয় করে সোমবার সন্ধ্যায় বৈঠক করতে চেয়েছিলাম। মালিকপক্ষ আসলেও আন্দোলনকারীরা আসেননি। এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি ডাইরেক্টরও (লেবার)। কিন্তু আমরা বৈঠক বসেও ফোনে বার বার যোগাযোগ করেছি- তারা আসেনি। তারাপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক রিংকু চক্রবর্তী বলেন, নিশ্চয় কেউ তাদের উসকানি দিচ্ছে। তা না হলে সমাধানের জন্য তাদের ডাকলেও তারা আসবে না কেন।